সদ্য ঘোষিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আওতাধীন ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে ত্যাগী, কারানির্যাতিত সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ হারুন সহ যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে চিহ্নিত আওয়ামী দোসরদের দিয়ে ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদে ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।
শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে নগরীর বারিক বিল্ডিং মোড়ে এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বারিক বিল্ডিং মোড়ে থেকে শুরু হয়ে ৩ নং ফকির হাট, নিমতলা, খালপাড় হয়ে ফকিরহাট রোড় পদক্ষিন করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ অবৈধ লেনদেনের মাধ্যামে চিহ্নিত আওয়ামী দোসরদের দিয়ে গঠিত পকেট কমিটি অনতিবিলম্বে বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবী জানান।
৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ইসহাক এর পরিচালনায় বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদ্য ঘোষিত গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো. নাজিম উদ্দিন, বিএনপি নেতা হাজী মো. হোসেন, মো. শাহ আলম, মো. শওকত মান্নান, মো. ইউসুফ, আবদুল মজিদ, জাহিদ হোসেন বাচ্চু, মো. সাগির, মো. জোবায়ের, আবদু্ল হকিম, যুবদল নেতা মো. কামাল উদ্দিন, মো. ইকবাল, মো. তুহিন, বন্দর থানা বৃষক দলের সাধারন সম্পাদক মো. ইমরান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. ইয়ার খান, ছাত্রদল নেতা মো. আকতার, হাসান রাসেল, মো. ইমরান, মো. আবু সাগর শাকিল, শফিকুল ইসলাম লিটন প্রমূখ।
বক্তরা বলেন, বর্তমান মাহানগর বিএনপি কমিটির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ডের দিক নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধ টাকার বিনিময়ে আন্দোলন সংগ্রামে পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে কমিটি বানিজ্য শুরু করেছে। বিশেষ করে গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের নবগঠিত কমিটিতে বিগত সময়ে কারানির্যাতনের শিকার হওয়া ত্যাগী সাবেক সাধারন সম্পাদক আবু সাঈদ হারুনকে বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও পরিবারতন্ত্র কায়েম করে পকেট কমিটি করা হয়েছে। বহু যোগ্য নেতা থাকতেও চিহ্নিত পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ও নিস্ক্রিয় ব্যক্তিকে আহবায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে। এর আগে নগর বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে আন্দোলন সংগ্রামে নিষ্ক্রিয় থাকা গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের আবদুস সবুর ও আবু মুছা নামিয়
দুই ব্যাক্তিকে সদস্য করেছে বর্তমান নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। নাজিমুর রহমান এজেন্টের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় কমিটির পদ বানিজ্য করে যাচ্ছে। অথচ দলের হাইকমান্ডের স্পষ্ট দিক নির্দেশনা রয়েছে আন্দোলন সংগ্রামের রাজপথের ত্যাগী, কারানির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীর সমন্বয়ে কমিটি করতে হবে। ঘোষিত কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিব আন্দোলন সংগ্রামে তার কোন ভূমিকা ছিল না৷ এছাড়া ঘোষিত কমিটির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান, এমপি এম এ লতিফ, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, শ্রমিক লীগের সভাপতি সফর আলী, চেম্বারের সভাপতি মাহাবুব আলম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল আলম চৌধুরী ও মহানগর যুবলীগের সভাপতি সালাউদ্দিনের সাথে বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্থির ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাইরাল হয়েছে। এটি আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী একটি পকেট কমিটি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘোষিত কমিটিতে যারা দুঃসময়ে ত্যাগ স্বিকার করেছেন তাদের নতুন কমিটিতে বাদ দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ওয়ার্ড ও থানা বিএনপির সাবেক নেতাদের নামে বারবার মামলা হামলা হলেও বর্তমান কমিটির সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই।
সামাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড কমিটি সহ চট্টগ্রাম মহানগরীর আওতাধীন ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটি গঠনে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে বিএনপির হাইকমান্ডের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। পাশাপাশি ঘোষিত অবৈধ কমিটি বাতিল করে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের চাহিদার ভিত্তিতে ত্যাগি নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে কমিটি ঘোষণার দাবী জানান।