মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

খুলে গেল বিমানের চাকা, ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ

শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি ৪৩৬ এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। ৭১ জন যাত্রী নিয়ে আকাশে ওঠার পর উড়োজাহাজটির বাম পাশের একটি ল্যান্ডিং গিয়ার চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়। এরপর একটানা প্রায় এক ঘণ্টার উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহর অসামান্য দক্ষতায় বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সফলভাবে জরুরি অবতরণ করে।

বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটটি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ১৭ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। কিছুক্ষণ পরই কক্সবাজার বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, উড়োজাহাজটির বাম পাশের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে গেছে। বিষয়টি তখনো বিমানের সেন্সরে ধরা পড়েনি। পরবর্তীতে ঢাকার আকাশে আসার পর ফ্লাইটটি লো-ফ্লাই করে এবং কন্ট্রোল টাওয়ার নিশ্চিত করে—একটি চাকা নেই।

ঘটনাটি জানার পরপরই ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ দ্রুততার সঙ্গে ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জরুরি অবতরণের বার্তা পাঠান। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রস্তুত হয় যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায়। দুপুর ২টা ২২ মিনিটে ফ্লাইটটি দক্ষতার সঙ্গে এক পাশের চাকার ভারে কাত হয়ে নিরাপদে অবতরণ করে।

যাত্রীরা সবাই অক্ষত ও নিরাপদ আছেন বলে জানান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর। তিনি বলেন,ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ ও তার সহকারী পাইলট জায়েদ এবং কেবিন ক্রুরা দারুণ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে যাত্রীদের নিরাপদে অবতরণ করিয়েছেন।
এদিকে অবতরণের পর যাত্রীরা বিমানের পাইলট এবং কেবিন ক্রুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং জরুরি ব্যবস্থাপনার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন।

 

নেক্সট এয়ার একাডেমীর চিফ ফ্লাইট ইন্সট্রাকটর ক্যাপ্টেন রাজীব উদ্দিন বলেন, বৈমানিকেরা অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন। ট্রেনিংয়ে শেখানো হলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারা প্রশংসার যোগ্য।

প্রসঙ্গত, ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ এর আগে বোয়িং ৭৩৭ ও ৭৮৭ ড্রিম-লাইনার ফ্লাইটে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে আট হাজার ঘণ্টার উড্ডয়ন অভিজ্ঞতা।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর অন্যান্য ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটটির বিষয়ে একটি তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।