আদালতের আদেশের পর দলের নিবন্ধনের পাশাপাশি ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকও ফিরে পাওয়ার আশা করছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ।
সোমবার (২ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
এর আগে রবিবার (১ জুন) আপিল বিভাগের রায়ের কপি নিয়ে নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল সিইসির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।
তারা হলেন- জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং প্রখ্যাত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
সভায় চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে আযাদ বলেন, ‘আদালতের আদেশের কপি আমরা ইসিতে জমা দিয়েছি। আশা করছি, নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দুইই ফিরে পাব। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনও ইতিবাচক। কারণ প্রতিহিংসামূলক তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের সভা কোনো আদালত নয়। ওই সভার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত কোনোভাবে মানার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আদালতের আদেশে পূর্বের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মানে এটা অটোমেটিক তালিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। বাকিটা হলো অফিসিয়াল। যেমন আমি ২০০৮ সালে নির্বাচন করেছি নবম সংসদ নির্বাচনে। তখন নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলাম, আমিতো দাড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছি। আদেশে আজ পর্যন্ত হাইকোর্ট যে অন্যায় আদেশটা দিয়েছিল, যে আদেশটা বাতিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, সেখানেতো প্রতীকসহ ছিল সুতরাং এখানেও আদালতের আদেশ এখানে তাদেরতো (ইসি) না দেওয়ার কিছু নেই, তারা (ইসি) বলেনওনি, আদালতের বিরুদ্ধে বলার সুযোগও নেই। যেহেতু ২০১৩ সালে হাইকোর্ট অর্ডার করার আগে তখন প্রতীক (দাঁড়িপাল্লা) ইসির সংরক্ষিত তালিকায় ছিল, দলের নিবন্ধনও ছিল।’
এর আগে রবিবার রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করে ইসিকে দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
এক যুগ পর ঘোষিত এই রায়ে সর্বোচ্চ আদালত বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
আপিল বিভাগের রায়ের মধ্য দিয়ে নিজ দলের প্রতীক নিয়ে আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথ খুলতে যাচ্ছে। এর আগে ২০০১-০৬ সালে বিএনপির সঙ্গে সরকারে ছিল জামায়াতে ইসলামী। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট সংবিধানের সঙ্গে গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণ দেখিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দাঁড়িপাল্লা ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে এবং কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। ওই সিদ্ধান্ত ইসিকে পাঠানোর পর নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা থেকে জামায়াতের জন্য বরাদ্দ মার্কা দাঁড়িপাল্লা নির্বাচনি প্রতীক তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ২০১৭ সালের ৮ মার্চ গেজেট জারি করে ইসি।