মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

সাতকানিয়ায় দর্জি সুবীর চক্রবর্তী হত্যায় জড়িত ৩ আসামি ময়মনসিংহ থেকে আটক

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আলোচিত দর্জি সুবীর চক্রবর্তী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এজাহারনামীয় ৩ আসামিকে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

শনিবার (৩ মে) ভোর ৬টার দিকে র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

গ্রেপ্তার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন-সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ফকিরখীল গ্রামের বাসিন্দা মৃত অরুন দাসের পুত্র দীপক দাস (৫২), দীপক দাসের দুই ছেলে দীপ্ত দাস (২৪) ও সুমিত দাস (১৯)।

শনিবার (৩ মে) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপরোক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র‍্যাব-১৪।

র‍্যাব-১৪ জানায়, দর্জি সুবীর চক্রবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব-৭। এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭ এর একটি চৌকস টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৩ আসামি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানা এলাকায় অবস্থান করছে। পরে বিষয়টি র‍্যাব-১৪ কে জানানো হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে র‍্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মৃত অরুন দাসের পুত্র দীপক দাস (৫২), দীপক দাসের দুই ছেলে দীপ্ত দাস (২৪) ও সুমিত দাসকে (১৯) গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। পরে গ্রেপ্তার আসামিদের ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, সাতকানিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ইতোমধ্যে আসামিদের নিয়ে আসার জন্য ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা মডেল থানার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আসামিদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের নিকট সোপর্দ করা হবে।

প্রসঙ্গত, নিহত দর্জি সুবীর চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে আসামিদের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় প্রায় দুই বছর আগে তাদের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহত দর্জি সুবীর চক্রবর্তীর পরিবারের বেশ কয়েকজনসহ সদস্য আহত হন। পরে তারা একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সর্বশেষ (২১ মার্চ) সকালে অভিযুক্ত রূপক দাসের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত সুবীর চক্রবর্তীর স্ত্রী জয়শ্রী চক্রবর্তী ও মামলার বাদী প্রবীর চক্রবর্তীর স্ত্রী সোমা ভট্টাচার্যকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তারা সেগুলো মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। একইদিন রাতে স্থানীয় সমাজপতি সুশীল দাস নিহত সুবীর চক্রবর্তী ও তার বড়ভাই মামলার বাদী প্রবীর চক্রবর্তীকে পূজার বিষয়ে আলাপচারিতার জন্য মোবাইলে কল দিয়ে ডাকেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে সেখানে যাওয়ার পথে আসামিরা সুবীর চক্রবর্তীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা সুবীর চক্রবর্তীকে ছুরিকাঘাত করেন। তাকে রক্ষা করতে তারই বড়ভাই মামলার বাদী প্রবীর চক্রবর্তী এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই প্রবীর চক্রবর্তী বাদী হয়ে (২২ মার্চ) সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখপূর্বক ২ থেকে ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পরপরই আসামিদের মধ্যে দীপক দাসের স্ত্রী ঝুমুর দাস, রূপক দাসের স্ত্রী স্বপ্না দাস ও মেয়ে অন্তরা দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।