মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

রাঙ্গামাটি সড়ক দিয়ে রাতে পাচার কালে বিপুল পরিমাণ কাঠ সহ ট্রাক জব্দ

শফিউল আলম,রাউজানঃ চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মহাসড়ক,সার্তকাপ্তাই মহসড়ক, কর্ণফুলী নদী, সর্তার খাল দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার কাঠ পাচার সংশ্লিষ্ঠরা নিরবতা পালন করে আসছে রহস্যজনক ভাবে। কোন ভাবেই থামছে না চোরাই কাঠ পাচার। পার্বত্য চট্টগ্রামে বেপরোয়া কাঠ পাচারের ফলে বনজ সম্পদ উজাড় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অনিয়মের মাধ্যমে পুরো ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে কাঠ ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীরা। চোরাই কাঠের রমরমা বাণিজ্যের কারণ অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে, স্থল কিংবা জলপথ, যে পথেই পাচার হোক না কেন পথের প্রতিটি চেকপোস্টকে ম্যানেজ করা হয় অর্থের বিনিময়ে। বনবিভাগের পরিসংখ্যান, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, বোয়ালখালী, বাঁশখালীসহ ১৪টি উপজেলা, পার্বত্য চট্টগ্রামের কাউখালী, কাপ্তাই, বরকল, নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, রোয়াংছড়ি, লামা, মানিকছড়ি, দীঘিনালাসহ ২৫টি উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু ও উপকূলীয় অঞ্চলসহ সেখানকার ৫টি উপজেলায় বনবিভাগের বনভূমি রয়েছে ১৬ লাখ ৮৮ হাজার একরের মতো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিমাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম, উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫ লাখ ঘনফুট কাঠ চট্টগ্রাম নগরী ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পাচার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। জানা গেছে, অভিযানে যে পরিমাণ কাঠ আটক হয়, পাচার হয়ে যায় তার চাইতে অনেক বেশি কাঠ। সড়ক ও নৌপথে কাঠ পাচারের প্রস্তুতি থাকে পাচারকারীদের।এছাড়া এদের হয়ে কাজ করার জন্য বিশ্বস্ত সোর্সও নিয়োগ দেয় তারা। সড়ক পথে কড়াকড়ি আরোপের খবর পেলে নৌপথে পাচার করা হয় কাঠ। এক হিসাবে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা সড়কপথে বৈধভাবে কাঠ নিয়ে নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে তাদেরকে বিভিন্ন স্পটে গাড়ি প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। এভাবে দৈনিক আড়াই লাখ টাকার মতো চাঁদাবাজি হচ্ছে। আবার অবৈধভাবে যে-সব কাঠ আসে সেগুলোর চাঁদার অঙ্ক দ্বিগুণ। পার্বত্য চট্টগ্রামের সংরক্ষিত বন এলাকার বৃক্ষ নিধন করে চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মহাসড়ক, চট্টগ্রাম কাপ্তাই মহাসড়ক দিয়ে ট্রাক জীপ ভতি করে কাঠ পাচার করে অবৈধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা । পার্বত্য এলাকার সংরক্ষিত বন এলাকার বৃক্ষ নিধন করে রাউজানের সর্তার খাল দিয়ে বাশের চালার সাথে ভাসিয়ে প্রতিদিন রাউজানের কালচান্দ চৌধুরী হাটে এনে করাত কলে স্তুপ করে । করাত কলে সাইজ করে কাঠগুলি ট্রাক জীপ ভর্তি করে চট্টগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে অবৈধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা । কর্ণফুলী নদী দিয়ে যান্ত্রিক নৌযান ও ড্রেজারের সাথে বেধে সংরক্ষিত বন এলাকার কাঠ পাচার করছে অবৈধ কাঠ পাচার কারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা । চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মহাসড়ক দিয়ে অবৈধভাবে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সেগুন ও গামরি কাঠ জব্দ করেছে বন বিভাগ। গত ১৫ জুন রবিবার রাত ১২টার দিকে রাউজান পৌরসভার ০৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জের আওতাধিন রাউজান ঢালারমুখ স্টেশনের সামনে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক থেকে কাঠভর্তি ট্রাক আটক করা হয়। সূত্র জানায়, বন বিভাগের রাউজান ঢালারমুখ স্টেশন কর্মকর্তা এস.এম রেজাউল ইসলামের নেতৃত্বে ট্রাকভর্র্তি (চট্টমেট্রো-ড-১১-২৯৭৬) বিপুল পরিমাণ অবৈধ সেগুন ও গামারি কাঠ জব্দ করা হয়। গতকাল ১৬ জুন সোমবার দুপুরে বন বিভাগের রাউজান ঢালারমুখ স্টেশনে ছুটে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অংচিং মারমা। তিনি বলেন, ‘জব্দকৃত কাঠের ট্রাকে অবৈধ অন্যকিছু থাকতে পারে এমন গোপন সংবাদ পান ইউএনও। উনার নির্দেশনায় ট্রাক থেকে কাঠ নামানোর সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। কাঠ ব্যতিত অন্য কিছু পাওয়া যানি। উত্তর বন বিভাগের ইছামতি রেঞ্জের আওতাধিন রাউজান ঢালারমুখ স্টেশন অফিসের কর্মকর্তা এস.এম রেজাউল ইসলাম বলেন, রবিবার রাতে ট্রাকভর্তি অবৈধকাঠের ট্রাক আটক করা হয়েছে। চালক বা পাচারের সঙ্গে জড়িতদের কাউকে আটক করা যায়নি। জব্দকৃত সেগুন ও গামারি কাঠসমূহ পরিমাপ করা হচ্ছে, শেষ হলে জানানো হবে।