মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে দেশের বৃহৎতম মনষ্যসৃষ্ট কাপ্তাই হ্রদ পানিতে টইটম্বুর হয়ে চিরচেনা রূপে ফিরছে। ফলে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নতি হয়েছে তেমনি হ্রদের ওপর নির্ভরশীল দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে রুলকার্ভের চেয়ে প্রায় ১৭ ফুট পানি বেশি রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে দৈনিক ১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। যা সরাসরি জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হচ্ছে। তবে কাপ্তাই হ্রদে পানি আরও বাড়লে ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। শনিবার কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে পানি থাকার কথা ৮০ দশমিক ৪২ ফুট মীন সী লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু লেকে পানি রয়েছে ৯৭ দশমিক ১১ ফুট এমএসএল। অর্থাৎ রুলকার্ভের হিসাবে কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে।
কাপ্তাই হ্রদে পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল। তবে লেকের পানি ১০৫ ফুট এমএসএলে এসে পৌঁছলে কর্তৃপক্ষ ঝুঁকি এড়াতে হ্রদের পানি ছাড়তে বাধ্য হয়। ভারী বর্ষন অব্যাহত থাকলে হ্রদে পানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধির কারণে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন আগেও কাপ্তাই হ্রদের যেসব এলাকা পানি শূন্য ছিল সেসব এলাকা বর্তমানে পানিতে ডুবে গেছে। পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে ধেঁয়ে আসা পানির কারণে কাপ্তাই হ্রদ টইটম্বুর হয়ে পড়েছে। এতে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
কাপ্তাই জেটিঘাট নৌ পরিবহন মালিক সমিতির ম্যানেজার শীতল সরকার জানান, বর্তমানে হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপ্তাইয়ের সাথে বিলাইছড়ি, রাঙামাটি, সহ নৌপথে বেশ কয়েকটি পাহাড়ী এলাকার নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিছুদিন পূর্বেও হ্রদে পানি স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হয়েছিল। পানি বৃদ্ধিতে এই সংকট দূর হলো।
