মির্জা ইমতিয়াজ শাওন, প্রিয় চট্টগ্রাম: ১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করবেন আগামী মাসে এবং অংশ নেবেন ৩৬ জুলাই এর মহাসমাবেশে এমনটাই শুনা যাচ্ছে । তাঁর জন্য এরি মাঝে প্রস্তুত বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি ১৯৬ গুলশান এভিনিউ। তারেক রহমানকে বরণে নেতা কর্মীরা মানসিক ভাবে তৈরি। তারা তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন ঢাকায় উপস্থিত থাকতে চায়। তারেক রহমান দেশে ফেরার দিন-তারিখ চূড়ান্ত করলে পাসপোর্ট কিংবা ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করা হবে।
একজন সিনিয়র নেতা জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে ২০ লাখ কর্মী সমর্থক সেদিন উপস্থিত করার লক্ষ্য রয়েছে কিন্তু অনেকেই মনে করছেন এ সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে, লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে গোটা ঢাকা শহর। ঢাকা পরিনত হবে জনসমুদ্রে, মিছিলে স্লোগানে প্রকম্পিত হবে অলিগলি রাজপখ।
সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে এই মুহূর্তে তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনও ধরনের বাঁধা নেই।
দলীয় সূত্র এবং তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, বিএনপির রাজনীতিতে তারেক রহমানই এখন প্রধান নেতা। তারেক রহমান দেশে ফিরেই আগামী নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। আগামী নির্বাচনে তার নেতৃত্বেই দলটি নির্বাচন করবে এবং ধারণা করা হচ্ছে দল ক্ষমতায় এলে তিনিই হবেন বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরার পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দায়ের করা মামলা। এগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা করেছেন আইনজীবীরা। তিনি এখন মুক্ত। তার দেশে ফেরার বিষয়টি আমরা অনুধাবন করছি। এ নিয়ে দলে, দলের বাইরে আলোচনা চলছে। তবে দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেই নেবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। এর পর থেকে তিনি কবে ফিরবেন, সেটি নিয়ে নতুন করে আগ্রহ, কৌতূহল এবং আলোচনা চলছে দেশে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে তাঁর (তারেক রহমান) দপ্তর এবং তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা আয়োজন এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এবং সরকারের কাছেও এসব বিষয় নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তিনি দ্রুতই আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘সহসাই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন, কেটে যাবেরজানীতির কালো মেঘ।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরবেন সে বিষয়ে কিছু জানি না। সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ জানানো হয়নি। দিন-তারিখ ঠিক হলে গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
নিশ্চিত হওয়া গেছে, দেশে ফিরে গুলশান-২ এর অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে ১৯৮১ সালে তৎকালীন সরকার রাজধানীর গুলশান এলাকায় দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই ডুপ্লেক্স বাড়ি বরাদ্দ দেয়। এতদিন বাড়িটির নামজারি করা হয়নি। তবে লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর রাজউকের পক্ষ থেকে জমির নামজারিসহ সব ধরনের কাগজ প্রস্তুত করে খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাড়িটি আগে ভাড়ায় ব্যবহার করতো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। জানা গেছে, ছয় মাস আগে বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে কোম্পানিটি। এরপর এটি তারেক রহমানের থাকার উপযোগী করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে। বাড়িটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত বলেই তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করা বাড়িটি খালেদা জিয়ার বাসভবন গুলশানের ‘ফিরোজা’র কাছেই ।