চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পদ ছেড়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দিয়েছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যসহ চার আওয়ামী লীগ নেতা।
শনিবার (২১ জুন) রাতে প্রাথমিক সদস্য পদের ফরম পূরণ করে দলটির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলীর নগরীর ২নং গেইট এলাকায় ব্যবসায়িক কার্যালয়ে তারা যোগদান করেন।
এলডিপির দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল বিষয়টি জানিয়েছেন।
এলডিপিতে যোগদান করা আওয়ামী লীগ নেতারা হলেন- উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা আওয়ামী যুবলীগের সহ সভাপতি ও কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির আহমদ, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তালেব সিকদার, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহেব মিয়া এবং উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও একই ইউনিয়নে ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য রোকেয়া বেগম।
এ বিষয়ে মনির আহমদ বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক ছিলাম। দলে আমার কোন পদবী ছিল না। বর্তমানে আমি এলডিপির সমর্থক হিসেবে ফরম পূরণ করেছি।
আবু তালেব মেম্বার বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে কিছুই পাইনি। মানুষের সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ ও অত্যাচার করিনি। তারপরও জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। তাই সদস্য ফরম পূরণ করে এলডিপিতে যোগদান করেছি।
সাহেব মিয়া মেম্বার বলেন, ‘আমাদের পরিষদের চেয়ারম্যান ওচমান আলী আওয়ামী লীগ ছিলেন। তাই ইউপি সদস্য হিসেবে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তাই ওনার দলে যোগদান করেছি। আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ আসনে তার পক্ষে কাজ করব ইনশাল্লাহ।’
তবে রোকেয়া বেগম বলেন, আমি এখন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আপনি আমার সঙ্গে দেখা করেন। এর পর আমি আপনাকে বিস্তারিত জানাতে পারব।
এর আগে সপ্তাহখানেক আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য শামসুল আলমও এলডিপিতে যোগদান করেছেন বলে উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা এলডিপির সভাপতি হোসেন উদ্দিন আহমদ ভুট্টু নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী বলেন, যোগদানকারীরা প্রাথমিক সদস্যপদ পূরণ করে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। যে কেউ এক দল থেকে অন্য দলে যাওয়ার অধিকার রাখে। কারো বিরুদ্ধে যদি কোন দুর্নাম ও মামলা না থাকে তারা আমাদের দলে যোগ দিতে পারবেন।
তবে তাদের এলডিপিতে যোগদানকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ ভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। বিভিন্নজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ লিখেছেন, সাতকানিয়ার বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতাদের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কারগুলোর অন্য দলে যোগদানের হিড়িক চলছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এম. লুৎফর রহমান মাসুম লিখেন, প্রিয় কেঁওচিয়াবাসী জাতীয় বেইমানদের চিনে রাখবে।