মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া মোকাবিলায় চট্টগ্রামে তিন মাসের বিশেষ অভিযান শুরু করলো চসিক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও কোভিড-১৯ (অমিক্রনের নতুন ভ্যারিয়েন্ট) প্রতিরোধে আগামী তিন মাসব্যাপী বিশেষ সচেতনতামূলক ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছে।

শনিবার (২৮ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) চত্বরে এক গণসচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধনকালে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ একসাথে তিনটি ভাইরাল রোগ মোকাবিলা করা—কোভিডের অমিক্রন এক্সবিবি ভ্যারিয়েন্ট, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া। এর মধ্যে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া সিজনাল হলেও, সঠিক প্রস্তুতি ও গণসচেতনতা ছাড়া ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’

তিনি মশক নিধন কার্যক্রম এবং পরিচ্ছন্নতা উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। জনগণকে সজাগ থেকে পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের কর্মীদের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে এবং জনগণের সাথে মিলেমিশে কাজ করছি।’

জনগণের মাঝে ওষুধ কার্যকর না হওয়া নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর জবাবে মেয়র বলেন, ‘একই ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশার মধ্যে রেজিস্টেন্স তৈরি হয়। এজন্য আমরা ইউকে ও শিকাগোর একটি গবেষণাভিত্তিক নতুন মশা নিধন ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছি। ফলাফল ভালো পেয়েছি। যদিও দাম বেশি, তবু এই ওষুধ দিয়ে কম কনসেন্ট্রেশনে কার্যকর ফল পাওয়া যাচ্ছে।’

বর্তমানে চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে কোন ওয়ার্ড কমিশনার নেই। তবে তাতে কাজ থেমে থাকছে না বলেও জানান মেয়র।

তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও সুপারভাইজাররা ইতিমধ্যেই প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজ করছেন। রাজনৈতিক নেতা, পেশাজীবী, মহল্লা সরদার—সবাইকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। তবে সবাই সুস্থ আছেন এবং গুরুতর কোন রোগী নেই বলে মেয়র জানান।

মেয়র জনসচেতনতার উপর জোর দিয়ে বলেন, ‘আপনারা জনসচেতনতা বৃদ্ধি করুন, আমিও চেষ্টা করছি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন জায়গায় নালা, ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার রাখা, লিফলেট বিতরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। অন্যথায়, জনগণের আমরা কোন উপকারে আসতে পারব না। মশার প্রজনন রোধে, কোথাও ডাবের খোসা, বালতি, নির্মাণ সামগ্রী উন্মুক্ত রাখা যাবে না। এতে পানি জমে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। বাসায় টব, বালতিতে দুই তিন দিন পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। খোলা জায়গায় টব রেখে পানি জমা করা যাবে না। কারণ ওখানে পা

নাগরিকদের প্রতি মেয়র আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘শুধু সিটি কর্পোরেশনেরওপর দায় চাপিয়ে না দিয়ে প্রতিটি নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে। ফুলের টব, ছাদ, বারান্দা—যেখানেই পানি জমে, তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে, সন্ধ্যার পর ফুলহাতা জামা-প্যান্ট পরিধান জরুরি। নামাজের সময়ও যেন স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়, বিশেষ করে মসজিদের ভেতরও যেন ডেঙ্গু প্রতিরোধে সতর্কতা থাকে।’