মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন সম্পন্ন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস বুধবার (২ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাহফুজুল হক (মাহফুজ পারভেজ)।

উপাচার্য তার বক্তব্যে নবীন শিক্ষার্থীদেরস্বাগত জানিয়ে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি বিভাগ। জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করেই একাডেমিক কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। উপাচার্য বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর এ দেশকে পুনর্গঠনের একটি সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল। বিভিন্ন দলাদলি, একপেশে চিন্তাধারা, রাজনৈতিক হানাহানি ও সর্বোপরি অনৈক্যের ফলে সে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। বিগত ২৪-এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে সে সুযোগ আবার ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, এবারের এ সুযোগ আর হাতছাড়া করা যাবে না। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নতুন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে একযোগে কাজ করতে হবে। উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, এটি নেতা তৈরির ফ্যাক্টরি নয়। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরির কারখানা। যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে পারলেই নিজে থেকেই নেতা তৈরি হবে। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদেরকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না ভেবে, সারা পৃথিবীর শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে নবীন শিক্ষার্থীদেরকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যদ্বয় ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) নবীন শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে আন্তরিক শুভেচ্ছা, স্বাগত ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীকে পরাজিত করে যারা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছে, তাদেরকে তা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ ব্যয় হয়। এ সকল অর্থ সাধারণ কৃষক-শ্রমিক থেকে শুরু করে দেশের আপামর জনসাধারণের। তাই শ্রমিকের ঘামের টাকায় রাষ্ট্রের এ অর্থ যাতে বৃথা না যায়, শিক্ষার্থীদেরকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। উপ-উপাচার্য বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী পড়তে আসে, কিন্তু সব শিক্ষার্থী পাশ করে বের হতে পারে না—এটিও শিক্ষার্থীদের অনুধাবন করতে হবে। তিনি বিভাগীয় সভাপতিবৃন্দকে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, অর্ডিন্যান্স ও নিয়মনীতি সম্পর্কে জানাতে সেমিনারের আয়োজন করার পরামর্শ দেন। উপ-উপাচার্য প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে বিশ্বমানের কারিকুলাম তৈরি করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানান।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) বলেন, চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ একটি ঐতিহ্যবাহী বিভাগ। এ বিভাগে প্রথিতযশা অনেক শিক্ষক শিক্ষকতা করেছেন। এছাড়াও এ বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। উপ-উপাচার্য নবীন শিক্ষার্থীদেরকে এ ঐতিহ্যবাহী বিভাগের আলোয় আলোকিত হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফলেই আজকের নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে। এ নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষার্থীরা যে সুযোগ পেয়েছে, তা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

বিভাগের প্রভাষক মো. এরশাদুল হকের সঞ্চালনায় ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে চবি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের বর্ষীয়ান শিক্ষক প্রফেসর ড. ভূঁইয়া মো. মনোয়ার কবীর, চবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও উক্ত বিভাগের প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী, বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।