বাংলাদেশ হাসিনার নয়, ছাত্র-জনতার দেশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এনসিপির পদযাত্রার চতুর্থ দিনে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে তা একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, কৃষক-শ্রমিকের বাংলাদেশ, সাধারণ মানুষের বাংলাদেশ, ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশ। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য লড়াই করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এখনো হয়নি। আগের সিস্টেম রয়েই গেছে। সেই সিস্টেম বিলুপ্ত করে নতুন দেশ গঠনের জন্যই আমাদের নতুন পার্টি এবং কর্মসূচি। ইনশাআল্লাহ ঠাকুরগাঁওয়ে আমরা আবারও আসব। জাতীয় নাগরিক পার্টির কার্যক্রম ইতোমধ্যেই সারা দেশে চলমান। আপনারা আমাদের হাতকে শক্তিশালী করবেন, তরুণ এবং বিকল্প নেতৃত্বকে বেছে নেবেন।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, “এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র, মৌলিক সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং নতুন সংবিধানের জন্য আমরা লড়াই করছি। অবশ্যই জুলাই-আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে। আমাদের সংবিধানিক ভিত্তি থাকবে এই ঘোষণাপত্রে। যে কারণে দেশের হাজারো মানুষ রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে—আমরা তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে চাই। সেই আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।”
ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক সমাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এখানকার কৃষকরা অবহেলিত। তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় না। আমরা তাদের জন্য কাজ করতে চাই। সেই কৃষকের সন্তানেরাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, এবং তারাই এই গণঅভ্যুত্থান শুরু করেছিল। ফলে আমরা কৃষকের সন্তান এবং এই মাটির কথাই বলছি।”
সীমান্ত হত্যা ও বৈষম্যের প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমান্ত হত্যা বড় সমস্যা। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ভারতের মুসলমানদের অবৈধ অভিবাসী বলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা হুঁশিয়ারি দিতে চাই—এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, এটা গণঅভ্যুত্থানের পরে ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। এই দেশ বাংলাদেশপন্থীদের হাতেই চলবে।”
তিনি আরও বলেন, “সীমান্ত হত্যা যে কোনো মূল্যে বন্ধ করবো। ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরবঙ্গের অবহেলিত জেলাগুলোর প্রতি যেন কোনো আঞ্চলিক বা অর্থনৈতিক বৈষম্য না থাকে, সেটা নিশ্চিত করবো। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়ন শুধু ঢাকায় হলেই হবে না। প্রান্তিক জেলা গুলোতে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। সেদিনই আমরা প্রকৃত উন্নয়ন বলে গ্রহণ করবো।
এ সময় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।