সোমবার (৫ মে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও রয়েল সার্ভিস মিনিবাস মালিক সমিতির (রেজিষ্ট্রেশন নং-২৯২৫) মধ্যে সমঝোতা চুক্তির আলোকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হতে অক্সিজেন-শেরশাহ-লিংরোড ভাটিয়ারী পর্যন্ত রয়েল সার্ভিস মিনিবাস চলাচল উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সার্ভিসের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চবি সহকারী প্রক্টর প্রফেসর মো. বজলুর রহমান। চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর রয়েল সার্ভিস মালিক সমিতির সভাপতি জহির আহমদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েদের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে চবি সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, চবি ছাত্র প্রতিনিধিবৃন্দ, রয়েল সার্ভিস মিনিবাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চবি উপ-উপাচার্য বলেন, রয়েল সার্ভিস মিনিবাস চালুর মূল বিষয় হচ্ছে শিক্ষার্থীদের সার্ভিস দেওয়া। এ সার্ভিস পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের সাথে অবশ্যই ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে এ সার্ভিস পরিচালনা করতে হবে। হঠাৎ করে বাস ভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে না। উপ-উপাচার্য ভালো গাড়ি সরবরাহের মাধ্যমে এ সার্ভিস পরিচালনা করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে উপ-উপাচার্য ফিতা কেটে রয়েল মিনিবাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস ও রয়েল সার্ভিস মিনিবাস মালিক সমিতির (রেজিষ্ট্রেশন নং-২৯২৫) এর তত্বাবধানে এ সার্ভিস চালু করা হয়।
নিম্নোক্ত শর্তাবলি মেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দ্বিতীয় পক্ষ রয়েল সার্ভিস মিনিবাস মালিক সমিতির (রেজিষ্ট্রেশন নং-2925) মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চ.বি) রেলস্টেশন সংলগ্ন জিরোপয়েন্ট থেকে রয়েল সার্ভিসের বাস সমূহ ভাটিয়ারী পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে ২০ মিনিট পর পর ছেড়ে যাবে এবং ভাটিয়ারী হতে চবি ক্যাম্পাসে ফিরে আসবে। যাত্রী পূর্ণ হলে গাড়ী নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ছেড়ে যাবে। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনে বাস ছাড়ার সময় পরিবর্তিত হতে পারে।
২. নির্দিষ্ট টিকেট কাউন্টার থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা (শিক্ষার্থী ব্যতীত) টিকেট ক্রয় করবে, তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীদেরকে সরবরাহ করবে এবং টিকিটে যাত্রার সময়, ভাড়া ও বাসের নম্বর উল্লেখ থাকবে। টিকেট ছাড়া বাসে কাউকে উঠানো যাবে না।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা (আইডি কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে) ক্যাম্পাস জিরো পয়েন্ট হতে বড় দীঘিরপাড় পর্যন্ত জনপ্রতি ১৫/- টাকা হারে (সাধারণ যাত্রী ২০/- টাকা), অক্সিজেন পর্যন্ত জনপ্রতি ২০/- টাকা হারে (সাধারণ যাত্রী ২৫/-টাকা), বায়েজিদ শেরশাহ পর্যন্ত ২০/- টাকা হারে (সাধারণ যাত্রী ৩০/- টাকা), কালুশাহ পর্যন্ত ৩০/- টাকা হারে (সাধারণ যাত্রী ৪৫/- টাকা) এবং ভাটিয়ারী পর্যন্ত ৩৫/- টাকা (সাধারণ যাত্রী ৬০/- টাকা) হারে টিকেট ক্রয় করবেন। ছুটির দিন ও বিশেষ দিন সমূহে দিবা-রাত্রি সবসময় একই ভাড়া প্রযোজ্য থাকবে।
৪. যথাসময়ে গাড়ি ছেড়ে যাবে। আসন পূর্ণ না হলে খালি আসনের সংখ্যা অনুযায়ী ১নং গেইট থেকে যাত্রারত অবস্থায় ঐ খালি আসনের সমপরিমাণ যাত্রী আরোহণ করতে পারবে। যাত্রী আসনের অতিরিক্ত আরোহণ করানো যাবে না। ১নং গেইটে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট সময় পর্যন্ত যাত্রী উঠানোর জন্য সময় দেওয়া হবে।
৫. প্রতিটি বাসের চালক ও হেল্পার নির্ধারিত পোশাক পরিধান করবেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চালক ও হেল্পার পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
৬. চবি জিরো পয়েন্ট টিকেট কাউন্টারের সামনে মনিটরিং এর জন্য একাধিক সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
৭. বাস রুট হবে ক্যাম্পাস থেকে ভাটিয়ারী: চবি ক্যাম্পাস (জিরো পয়েন্ট)=> ১নং রাস্তার মাথা=> বড় দীঘিরপাড়=> অক্সিজেন=> বায়েজীদ শেরশাহ => কালুশাহ => লিংক রোড হয়ে ভাটিয়ারী
ভাটিয়ারী থেকে ক্যাম্পাস: ভাটিয়ারী > লিং রোড হয়ে কালুশাহ => বায়েজীদ শেরশাহ => অক্সিজেন => বড়দীঘির পাড়=> ১নং রাস্তার মাথা => চবি রেলস্টেশন (জিরো পয়েন্ট)।
৮. প্রতিটি বাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান স্টিকার লাগানো থাকবে। জরুরী যোগাযোগের জন্য স্টিকারে চবি কর্তৃপক্ষ ও রয়েল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের দুটি মোবাইল নাম্বার দেওয়া থাকবে।
৯. প্রাথমিক পর্যায়ে ৬০টি বাস দিয়ে সার্ভিস শুরু হবে, যা প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে। এই চুক্তির আওতায় চলাচলকারী বাস সমূহের তথ্য রয়েল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চবি প্রক্টর অফিসে জমা দিবে। প্রতি ২০ মিনিট অন্তর অন্তর বাস ছেড়ে যাবে।
১০. (ক) কোন অবস্থাতেই চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করবেন না। কোনো চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করলে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর মহোদয় বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করবে।
(খ) কোন চালক বা হেল্পার শিক্ষার্থী কর্তৃক কোন প্রকার অশোভন আচরণের সম্মুখীন হলে তা রয়েল সার্ভিস মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানাবেন।
১১. তেলের মূল্য হ্রাস বা বৃদ্ধি হলে চবি কর্তৃপক্ষ ও রয়েল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া হ্রাস বা বৃদ্ধি করা হবে।
১২. চবি ক্যাম্পাস হতে সকাল ৬:০০ টায় প্রথম বাস এবং রাত ১০:৩০ টায় শেষ বাস ছেড়ে যাবে। অপরদিকে ভাটিয়ারী থেকে সকাল ৬:০০ টায় প্রথম বাস এবং রাত ১১:০০ টায় শেষ বাস ছেড়ে আসবে।
১৩. এই চুক্তি ১ বছরের জন্য প্রযোজ্য। প্রতি ১ বছর অন্তর অন্তর আলোচনা সাপেক্ষে চুক্তি নবায়ন যোগ্য।
১৪. এই চুক্তি বাতিল, সংরক্ষণ, সংযোজন এবং বিয়োজনের ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখতিয়ারে থাকবে।
১৫. বাস কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ কর্তৃক চবি হতে ভাটিয়ারী পর্যন্ত রুট পারমিট এর যাবতীয় কাগজপত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করবে। চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরবর্তী ১ মাসের মধ্যে চবি হতে ভাটিয়ারী পর্যন্ত রুট পারমিট সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র চবি কর্তৃপক্ষের নিকট জমাদানে ব্যর্থ হলে চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।