মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে বালুবোঝাই পিকআপ ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭) নামে এক কিশোর ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন একই পরিবারের আরও ৪জন।
শনিবার (১৪ জুন) বিকাল ৩টায় বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকার আজমনগর স্কুলের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহিন উপজেলার ৭নং কাটাছরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মধ্যম বামনসুন্দর এলাকার বেলু বলী বাড়ির মৃত নুরুল করিমের ছেলে। সে পেশায় রাজমেস্ত্রীর সহকারী ছিলো বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন একই বাড়ির দোস মোহাম্মদের ছেলে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক জিয়া উদ্দিন বাবলু (৩০), তার স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০), ছেলে মানারুল (৩) ও মেয়ে তানিশা (৬)। তাদের সবাইকে বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপতালে প্রেরণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত সুমি আক্তার ও মানারুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী আবু সাঈদ খোকন বলেন, চিনকীরহাট এলাকায় একটি বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাকে সাইড দিতে গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা এবং বালুবোঝাই পিকআপটি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পিকআপটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে পাশে উল্টে পড়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালে নিয়ে গিলে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক চিকিৎসক। এসময় সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকসহ আরো ৪ জন আহত হয়। তিনি আরও বলেন, মহাসড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাগুলো বন্ধ করে দেওয়া দরকার। তা না হলে সড়ক দুর্ঘটনায় অহরহ প্রাণ হারাবে।
নিহত সাইফুল ইসলাম শাহিনের বড় ভাই মো. রুবেল বলেন, শনিবার দুপুরে আমার চাচাতো জিয়া উদ্দিন বাবলু তার পরিবার নিয়ে নিজে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ড্রাইভ করে করেরহাট ইউনিয়নের হাবিলদারবাসা এলাকায় তার শ^শুর বাড়িতে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সাকে সাইড দিতে গিয়ে বাবলু তার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই পিকআপভ্যানের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম শাহিন মারা যায়। এছাড়াও আমার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে আহত হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আহত সিএনজি চালক জিয়া উদ্দিন বাবলুর ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ভাই, তার স্ত্রী ও সন্তানদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মেয়ে তানিশা ছাড়া সবার অবস্থায় সংকটাপন্ন। আমরা হাসপাতালে অবস্থান করছি।
বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালের জুরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. আরিফ বলেন, শনিবার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭) নামে এক কিশোর হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। এছাড়াও সুমি আক্তার ও মানারুলের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাকিন হোসেন বলেন, শনিবার দুপুরে বারইয়াহারটÑখাগড়াছড়ি সড়কের চিনকিরহাট এলাকায় নম্বরবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা এবং বালুবোঝাই পিকআপের (চট্ট মেট্রো-ড ১১-২৭৫২) মুখোমুখি সংঘর্ষে শাহিন নামে এক সিএনজি যাত্রী নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও ৪জন। আতহদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিহতের ও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পিকআপ চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ মামলা দায়ের করেনি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।