শফিউল আলম, রাউজানঃ চট্টগ্রামের রাউজানে বাজারে ভেজাল ধান বীজের সয়লাব। নজর কাড়া প্যাকেটজাত ধান বীজের নামে চলছে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা। এরমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চড়া দামে কেনা বীজ ধানে অঙ্কুরোদগম হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকেরা। এতে কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। ভেজাল বীজ বিক্রয় বন্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। ধানের চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা প্রস্তুত করে বীজ বুনতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। এদিকে অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের ধান বীজ না কিনে বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি-বীজ) বীজ কেনার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, অনুমোদনহীন বীজ বিক্রয় রোধে শীগগরাই মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে। একই সঙ্গে কেউ ধানবীজ কিনে প্রতারিত হয়ে থাকলে কৃষি বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বিএডিসি-বীজ কম অপেক্ষকৃত দামে পাওয়া গেলে প্রচারণার অভাবে বেসরকারি বাণিজ্যিক কোম্পানির বীজের ওপর নির্ভর করছেন ধানবীজ ক্রেতারা। রাউজান উপজেলা কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, রাউজানে এবার রোপা আমনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ২০০ হেক্টর। সে হিসেবে বীজতলার লক্ষমাত্রা ৭০০ হেক্টর। ইতোমধ্যে ৩০ হেক্টর জমিতে বীজতলা প্রস্তুত হয়েছে। ধানের বীজে অঙ্কুরোদগম না হওয়া কৃষক মো. মুছা বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তত্ত্বাবধানে থাকা রাউজান কলেজ গেইটের সামনের মের্সাস রাউজান ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমি উচ্চ ফলনশীল ধান বীজ রণজিত পাইজার জাতের বীজ কিনে এনেছিলাম। আমাকে রশিদ দেওয়া হয়নি। বীজতলা প্রস্তুত করার পর অঙ্কুরোদগম জন্য প্যাকেটজাত ধান বের করলেই দেখতে পায়, মাটি আর অপরিপক্ব ধান মিশ্রিত। তারপরও ধানবীজ পক্রিয়াকরণ করে দেখি অঙ্কুরোদগম হয়নি। প্রতি কেজি প্যাকেট ৮০০ দামে দুই প্যাকেট কেনা ধানবীজ একদম নষ্ট হয়ে গেছে। অঙ্কুরোদগম না হওয়ায় আমার ক্ষতি হয়েছে। কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমিও বীজ ধান কিনে ঠকেছি। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মেসার্স রাউজান ট্রেডার্স এর সত্ত্বাধিকারী মো. শহিদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। দোকান কর্মচারীর দেওয়া নম্বরে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রাউজান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুম কবির বলেন, যেহেতু এটা বীজ সম্পর্কিত অভিযোগ সেহেতু তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে জেলা বীজ প্রত্যয়ণ অফিসে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। ভেজাল বীজ বিক্রয় রোধে কৃষি বিভাগ সক্রীয়ভাবে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।