বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: উত্তাল ঢেউ পর্যটকদের নিরাপত্তায় মাইকিং করছে লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা

একের পর এক বিশাল বিশাল ঢেউ, আছড়ে পড়ছে উপকূলে। আঘাত হানছে কক্সবাজার সৈকতের ঝাউবাগানে, আঘাত হানছে বালুভর্তি জিওব্যাগে। পর্যটকরা সমুদ্রস্নানে নামতে পারছে না সাগরে। একই সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে জেড স্কী ও কিটকট।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ার পানি স্বাভাবিক চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যার কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তায় মাইকিং করছে লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখা যায়, সাগর উত্তাল। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ে জিও ব্যাগ ডিঙিয়ে আঘাত করছে ঝাউবাগানে। আবার জিও ব্যাগের ওপর বসে থাকা পর্যটকও ঢেউয়ের আঘাতে পড়ে যাচ্ছে। অনেক পর্যটক পানিতে নামতে চাইলেও বড় বড় ঢেউ দেখে নামছে না। অনেকেই বড় বড় ঢেউ পেছনে রেখে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন। অনেক পর্যটক উত্তাল সাগর উপভোগ করছেন দূর থেকে।

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক রশিদ আহমেদ বলেন, গত ২ দিন ধরে কক্সবাজারে। কিন্তু সাগর এতো উত্তাল ছিল না। আজকে দেখছি সাগর প্রচণ্ড উত্তাল। সাগরে গোসলে নামার উপায় নেই। মনে হচ্ছে সাগরে নামলেই ঢেউ আঘাত করে নিয়ে যাবে।

আরেক পর্যটক মোহাম্মদ এমদাদ বলেন, এমন সাগর আগে কোনো দিন দেখা হয়নি। এত বড় বড় ঢেউ, সাগরের এমন সৌন্দর্য দূর থেকে খুবই উপভোগ করছি। তবে গোসল করতে নামে চেয়েছিলাম, কিন্তু লাইফ গার্ড কর্মীরা নামতে দেয়নি।

সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, জোয়ারের সময় সাগর বেশি উত্তাল। পানির উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই অনেক পর্যটক সাগরে গোসল করতে নামতে চাইলেও সাগর উত্তাল থাকায় কাউকে নামতে দেয়া হচ্ছে না। ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মী সবাই একযোগে কাজ করছি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবাইকে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে।

জোয়ারের সময় সাগর বেশি উত্তাল হওয়ায় পানির উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: সময় সংবাদ

এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন সৈকত পাড়ের জেড স্কী, বিচ বাইক, ফটোগ্রাফার ও কিটকট ব্যবসায়ীরা। সাগরের বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে জেড স্কী উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে উঠিয়ে রাখা হয়েছে পর্যটকদের বসার কিটকটও (ছাতা)। পর্যটক কম থাকায় ব্যবসা হচ্ছে না ফটোগ্রাফার ও বিচ বাইক চালকদের।

জেড স্কী চালক ফরমান বলেন, সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ। যার কারণে জেড স্কী উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যবসা এক প্রকার বন্ধ।

কিটকট ব্যবসায়ী রানা বলেন, লাবনী থেকে সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েকশ কিটকট বালুচর থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি।

এদিকে, বেলা ১১ টার পর শুরু হয় তুমুল ঝড়ো বৃষ্টি। পর্যটকরা ছুটতে থাকা দিগ্‌বিদিক। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে, অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে। তুমুল বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় বাতাসও। বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে ময়লা আবর্জনাও। আর গাছপালাও ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। চারদিকে মেঘাচ্ছন্ন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল ৯টা) কক্সবাজারে ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আজ ও কাল ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর পরেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ১-২ দিন থাকবে।