মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২০০ শিক্ষক চাকরিচ্যুত, প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন ভুক্তভোগীরা

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও-আইএনজিও সংস্থাগুলোর শিক্ষা প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। এর মধ্যে ইউনিসেফের আওতাধীন ক্যাম্পের শিক্ষা প্রকল্পে কর্মরত বাংলাদেশি ১ হাজার ২০০ শিক্ষককে তহবিল-সংকট দেখিয়ে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছেন ভুক্তভোগীরা।

শনিবার (১ মে) সকালে উখিয়া শহিদ মিনারে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় শিক্ষকরা।

এ সময় তারা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় তহবিল-সংকট দেখিয়ে নোটিশ ছাড়া বিনা কারণে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু রোহিঙ্গা ও বহিরাগত শিক্ষকদের ঠিকই চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে।’ শিগগিরই চাকরিতে পুনর্বহাল না করলে এনজিও-আইএনজিওর গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন স্থানীয় শিক্ষকরা।

শিক্ষকদের প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম শামীম জানান, গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ চার দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করার কারণে স্থানীয় ১ হাজার ২০০ শিক্ষককে ছাঁটাই করা হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্মারকলিপি দেওয়া হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে উখিয়া-টেকনাফে এনজিও-আইএনজিওর গাড়ি চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এদিকে স্থানীয়দের চাকরি ন্যায্য অধিকার বলে মনে করেন রাজনৈতিক ও সমাজকর্মীরা। তহবিল-সংকটের কারণে স্থানীয়দের চাকরি না থাকলে আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গাদের শিক্ষা প্রকল্পও বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় সংকট আরও ঘনীভূত হবে বলে মনে করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরী।

আইনজীবী ও তরুণ রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার সাফাত ফারদিন চৌধুরী বলেন, ‘হোস্ট এরিয়া উখিয়া মগের মুল্লুক নয় যে যখন যা খুশি সিদ্ধান্ত নেবেন। হোস্ট কমিউনিটির টিচারদের অন্যায়ভাবে অপসারণের চেষ্টা করা হলে আমরা ছাড় দেব না। সবকিছুর ফান্ড থাকে, হোস্ট কমিউনিটির বেলায় ফান্ড থাকে না- এই খেলা বন্ধ করতে হবে।’

অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি পালংখালীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোছাইন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এডুকেশন প্রকল্পে চাকরিরত ১ হাজার ২০০ জন স্থানীয়দের বাজেট-সংকটের অজুহাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। স্থানীয়দের চাকরি না থাকলে আমরা যাদের আশ্রয় দিয়েছি (রোহিঙ্গা), তাদের জন্য এডুকেশন প্রকল্পের কোনো প্রয়োজন নেই।’

উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত সংস্থাগুলোর শিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকরা কর্মসূচিতে অংশ নেন।