রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ, যেখানে শেষ ওভারে এসে মিললো জয়ের দেখা! শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উত্তেজনায় ভরা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচের সিরিজে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই ট্রফি নিশ্চিত করলো টাইগাররা। ম্যাচটি জয় শুধু পরিসংখ্যানেই নয়, নাটকীয়তায়ও ছিল অনন্য, যেখানে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক হয়ে উঠলেন নুরুল হাসান সোহান এবং শরিফুল ইসলাম।
আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪৭ রান। ইনিংসের শুরুটা ছিল ধীরগতির। সেদিকউল্লাহ আতাল ও ইবরাহিম জাদরানের ওপেনিং জুটিতে পাওয়ারপ্লেতে ৩৫ রান আসে। ওপেনিং ভাঙে ৫৫ রানে, আতাল ফেরেন ২৩ রান করে। এরপর ইবরাহিম ও গুরবাজ মিলে রান তোলার চেষ্টা চালালেও খুব বড় ইনিংস কেউ খেলতে পারেননি। ইবরাহিম করেন ৩৮ বলে ৩৭, গুরবাজ করেন ২২ বলে ৩০ রান।
শেষ দিকে মোহাম্মদ নবী (২০*) ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই (১৯*) কিছুটা ধাক্কা দেন। তবে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আফগানদের রান থামে ১৪৭-এ। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ হোসেন ও ওমরজাই ২টি করে উইকেট নেন, শরিফুল ইসলাম নেন ১টি উইকেট মাত্র ১৩ রানের খরচায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই চাপে পড়ে। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন মাত্র ২ রান করে ফিরে যান। ১৬ রানের মধ্যেই ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরপর সাইফ হাসানও বিদায় নেন ১৮ রান করে।
সেখান থেকে ইনিংস গুছিয়ে তোলেন শামীম হোসেন ও জাকের আলী অনিক। দুজনের জুটি কিছুটা স্বস্তি ফেরায়। জাকের করেন ২৫ বলে ৩২ রান, শামীম খেলেন ২২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস। তবে তাদের বিদায়ের পর একের পর এক উইকেট হারিয়ে আবারও বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।
এ অবস্থায় দলের হাল ধরেন নুরুল হাসান সোহান। তার ২১ বলে হার না মানা ৩১ রানের ইনিংস দলকে জয়ের দোরগোড়ায় নিয়ে যায়। আর শেষ বলের আগেই ম্যাচ শেষ করেন শরিফুল ইসলাম। দশ নম্বরে নেমে তার ৬ বলে ১১ রানের ইনিংস, যার মধ্যে ছিল শেষ ওভারের প্রথম বলে লং অন দিয়ে মারা বাউন্ডারিটি, জয় নিশ্চিত করে দেয় টাইগারদের। ৫ বল বাকি থাকতেই আসে জয়ের মুহূর্ত।
আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ছিলেন বল হাতে সবচেয়ে সফল, ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। রশিদ খান ২টি এবং নূর আহমেদ ও মুজিব ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
শেষদিকে শরিফুল ইসলামের ব্যাটিং বেশিরভাগ সময় আলোচনায় আসে না। কিন্তু আজ তিনি হয়ে ওঠেন নায়ক। ব্যাট হাতে তার সাহসী ইনিংস ছাড়াও শুরুতে বল হাতে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেও রেখেছিলেন চমৎকার ভূমিকা। অপরদিকে অভিজ্ঞ সোহান আরেকবার প্রমাণ করেন কেন ‘ফিনিশার’ বলা হয় তাকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৭/৫ (সেদিকউল্লাহ ২৩, ইব্রাহিম ৩৮, গুরবাজ ৩০, তারাখিল ১, রাসুলি ১৪, ওমারজাই ১৯*, নবি ২০*; শরিফুল ৪-০-১৩-১, নাসুম ৪-০-২৫-২, সাইফ উদ্দিন ৪-০-২২-০, রিশাদ ৪-০-৪৫-২)
বাংলাদেশ: ১৯.১ ওভারে ১৫০/৮ (তানজিদ ২, পারভেজ ২, সাইফ হাসান ১৮, জাকের ৩২, শামীম ৩৩, সোহান ৩১*, নাসুম ১১, সাইফ উদ্দিন ৪, রিশাদ ২, শরিফুল ১১*; মুজিব ৪-০-১৮-১, ওমারজাই ৩.১-০-২৩-৪, রশিদ ৪-০-২৯-২, নুর ৪-০-৪০-১)
ফল: বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: শরিফুল ইসলাম