মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বড়ুয়াদের প্রতি বৈষম্যের অবসানের দাবিতে ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাব জহুরুল হোসেন চেীধুরী হলে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠন, কেন্দ্রীয় কমিটি।

লিখিত বক্তব্যে বড়ুয়া জনগোষ্ঠির নেতৃবৃন্দ বলেন, ”বড়ুয়া” বর্তমান বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার একটি সুপরিচিত নাম। ইতিহাস সূত্রে এটা সুনির্দিষ্টরূপে প্রমাণিত যে, বড়ুয়া বৌদ্ধরা এদেশের আদি বাসিন্দা। এই বড়ুয়া বৌদ্ধরা ক্ষুদ্র জাতিসত্তায় বর্তমানে বিদ্যমান থাকলেও তাদের রয়েছে অতিসমৃদ্ধ গৌরবনীয় ইতিহাস ও প্রসিদ্ধ পরিচয়। বড়ুয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ বড় ধাতুর সাথে উয়া প্রত্যয় যোগে বড়ুয়া শব্দটি নিষ্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ বড় + উয়া = বড়ুয়া। বিশ্বকোষ অভিধানে বড়ুয়া সম্বন্ধে লিখিত প্রাচীনতম একটি আক্ষায়িকা হতে জানা যায়, বড়ুয়াগণ একটি প্রতিভাবান বৌদ্ধ রাজবংশের বংশধর। সংস্কৃত ভাষায় বটুক শব্দের অর্থ বড়ুয়া বা শ্রেষ্ঠ। বড়ুয়া শব্দটি উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিকে বোঝায়। বাংলা একাডেমির অভিধানে বড়ুয়া অর্থ দেখানো হয়েছে উচ্চপদস্থ বা সন্মানিত ব্যক্তি বা ধনী ব্যক্তি।

বাংলাদেশের বৌদ্ধদের সামগ্রিক অগ্রগতিতে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে ও ২০২৪ এর ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সহ বড়ুয়া বৌদ্ধদের অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি, অর্থনীতি, সাহিত্য, শিল্প, সঙ্গীত ও ক্রীড়ায় বড়ুয়াদের কৃতিত্ব সমগ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের গর্ব। বড়ুয়াদের জাতীয় চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হলো সরলতা, সত্যবাদীতা, ন্যায়পরায়ণতা, বিশ্বাস, একতা, আতিথেয়তা ও দানশীলতা । এরা সাধারণত সমবেত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং দূর্যোগ ও বিপদের সময় ঐক্যবদ্ধ থাকে। বড়ুয়ারা আচরণে ও কথাবার্তায় অত্যন্ত বিনয়ী ও সংযমী। এদিক থেকে তারা সার্থক বৌদ্ধ। তারা অত্যন্ত বন্ধুবৎসল। একে অপরের যেকোন সাহায্যে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশের বড়ুয়া জনগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা এবং যুবক-যুবতীরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও নিজ ধর্ম, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের প্রতি কখনো আস্থা হারায়নি।
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিকভাবে খুবই সমৃদ্ধ এক দেশ। ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি এবং জাতিসত্তাগত বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজ এদেশে। বাংলাদেশের সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের সমান অধিকারের স্বীকৃতি থাকলেও সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া বড়ুয়া জনগোষ্ঠী এখানে নানা রকম বৈষম্যের শিকার। সংবিধানের নির্দেশনা এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সরকারের উচিত এরূপ বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করা। এদেশে বড়ুয়া জনগোষ্ঠী মোট জনগোষ্ঠীর কত শতাংশ তার সঠিক কোন সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাব বা শুমারি নেই। গণশুমারিতে বড়ুয়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে আলাদাভাবে তথ্য উপস্থাপন করা প্রয়োজন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সকল নাগরিকের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অধিকার সমুন্নত এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত¦রান্বিত করা এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিকের স্ব-স্ব অধিকার সংরক্ষণ এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তরফ হইতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার অধিবাসীদের পক্ষ হইতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি চারি খন্ড (ক,খ,গ,ঘ) সম্মিলিত ভাবে ১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর চুক্তি করা হয়। চুক্তির পর ২৭ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রতিটি স্তরে স্তরে বৈষম্যের শিকার। পার্বত্য চুক্তি বা শান্তি চুক্তির ফলে ২৭ বছর ধরে পাহাড়ের বাঙ্গালিরা (মুসলমান, হিন্দু ও বড়ুয়া) চরম ভাবে বৈষম্যের শিকার।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের তিনটি উপজাতি জনগোষ্ঠীকে এককভাবে সুবিধা করে দিয়েছে। এতে শুধু সম্প্রদায় ও জাতিগত বৈষম্যই হচ্ছে না, দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান, হিন্দু ও বড়ুয়া নাগরিককে যোগ্য মানব সম্পদে পরিণত করে দেশ ও জাতি গঠনের কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে বিশাল ধরনের বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ চুক্তিতে রাঙামাটি চাকমা, খাগড়াছড়ি ত্রিপুরা ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা মারমাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
এখানে আরো পরিষ্কার করে যদি বলা হয়, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সদস্য ব্যতীত মুসলমান, বড়ুয়া, হিন্দু, তনচঙ্গা, সাঁওতাল, অহমিয়া, গুর্খা, কুকি, পাংখোয়া, লুসাই (মিজু), চাক, খুমি, খিয়াং ও ম্রো জনগোষ্ঠীর সদস্যদের পিছিয়ে রাখা হয়েছে।
পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে মুসলমান, বড়ুয়া ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর সদস্যদের বাঙ্গালি জনগোষ্ঠী তফসীল ভুক্ত করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে মুসলমান ও হিন্দু জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও বিগত ২৭ বছর ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর কোন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
চুক্তির পর গঠন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মূল্যায়ন কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তাকারী উপদেষ্টা কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ইত্যাদি গঠন করা হয় সংখ্যায় কম-বেশী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এসব কমিটিতে এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে রাখা হয়নি বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর কোন প্রতিনিধি।
পার্বত্য চুক্তির পর আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণের সাথে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বৈঠক করা হয় অন্য সকল জনগোষ্ঠীর ন্যায় বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কমপক্ষে ১জন করে প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য, তারা কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণ এবং সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা, তারা তাদের দেয়া কথা রক্ষা করেনি।
বিগত স্বৈরাচারের শাসনকালিন ১৭ বছর ধরে পাহাড়ে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর কিছু পদলেহনকারী স্বঘোষিত নেতার কারণে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কথা বলা সুযোগ পর্যন্ত ছিলো না।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ১৭ বছরে ক্ষমতায় থাকাকালিন তার দলীয় লোকজন বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে তার সংক্ষিপ্ত চিত্র : বাড়ি-ঘর ভাংচুর,ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, রাঙামাটি – ঢাকা রোডে সেন্টমার্টিন পরিবহনের ব্যবসা কেড়ে নেয়া, রাঙামাটিতে সত্য সংবাদ প্রকাশ করায় উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তথ্য প্রযুক্তি আইনে ৫৭ (২) ধারায় একাধিক মামলা দায়ের করে হয়রানি করা হয়।
রাঙামাটির ভেদ ভেদী বাজারে মৃত রুহিনী বড়ুয়ার জায়গাতে জোর পূর্বক দখল করে রাসেল স্মৃতি সংসদ নামে আওয়ামীলীগের অফিস ঘর নির্মাণ করে এবং রাঙামাটি পৌরসভার নাম দিয়ে মৃত রুহিনী বড়ুয়ার জায়গাতে ভেদ ভেদী পৌর কাঁচা বাজার নির্মাণ করে আওয়ামীলীগ।
৫ জুন-২০১৭ রাঙামাটি জেলখানার সামনে থেকে চট্ট-মেট্রো ১৩৪৪৬৫ নম্বরের একটি হাইয়েস গাড়িতে রর‌্যাব-৭ এর তৎকালিন মেজর ফাহিম এর নেত্বত্বে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যকে অপহরণ করে সিলেটের চুনারুঘাট থানার সাতছড়ি জঙ্গলে চোখবাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়। ২০১৭ সালে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর মহাপরিচালক ছিলো ড.বেনজির আহম্মদ।
গত ২৪ ফেব্রয়ারি-২০২৪ ইংরেজি তারিখ রাতে রাঙামাটি পৌরসভার ০৯ নং ওয়ার্ডের উলুছড়ি (আলুটিলা) এলাকায় বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যর বাগান বাড়িতে আওয়ামীলীগের মদদে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

৫ আগস্ট-২০২৪ তারিখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের পর পার্বত্যবাসী আশায় বুক বাধে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন যাবত বৈষম্যের শিকার বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা ও বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং পিছিয়ে থাকা প্রত্যকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায়ও তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে।
পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নিয়োগ, শিক্ষা উপবৃত্তি ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৈষম্যনীতির অবসান হবে। কিন্তু বর্তমান বৈষম্য বিরোধী চেতনাকে ধারণ করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক নতুনভাবে গঠিত তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে পূর্বের ন্যায় বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে। যা বর্তমান সরকারের বৈষম্য বিরোধী চেতনা বিরোধী এবং জাতীর কাছে কোনভাবে কাম্য নয়।
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চাকুরী ও শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে বাঙালিদের জন্য ৩০ শতাংশ ও নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জন্য ৭০ শতাংশ বরাদ্দ নীতি অবলম্বন করছে।
এছাড়াও নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য রাখা কোটার ৭০ শতাংশই চাকমা সম্প্রদায়ের। ফলে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায় বসবাসরত বাঙালি-বড়ুয়া-মারমা জনগোষ্ঠী সহ আরো বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে বিদ্যমান বৈষম্যনীতি দূর করে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল প্রকার নিয়োগ ও শিক্ষা বৃত্তি বন্টনের প্রস্তাব করছি।

১৯৯৭ সালে ২রা ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তিটি বৈষম্যেভরা। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের বিদ্যমান আইনে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চাকমা থেকে, চলমান পাতা-০৪

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ত্রিপুরা থেকে, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মারমা থেকে মনোনীত বা নির্বাচিত করার আইনটি বৈষম্যমূলক একটি আইন।
এধরনের বৈষম্যমূলক আইন বাতিল করে তিন বছর পর-পর পর্যায়ক্রমে মুসলমান, বড়ুয়া, হিন্দু,তনচঙ্গা, সাঁওতাল, অহমিয়া, গুর্খা, কুকি, পাংখোয়া, লুসাই (মিজু), চাক, খুমি, খিয়াং,ম্রো, চাকমা,মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্য থেকে প্রতিনিধিকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করার আইন প্রণয়ন করা অতিব জরুরী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠন এর দাবি :

(১) পার্বত্য চুক্তিটি সংশোধনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সহ তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।

(২) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মূল্যায়ন কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তাকারী উপদেষ্টা কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর বোর্ড সভায়, তিন পার্বত্য জেলা প্রশাসনে আইন শৃংখলা কমিটিতে, তিন পার্বত্য জেলার ২৬টি উপজেলা প্রশাসনে আইন শৃংখলা কমিটিতে, তিন পার্বত্য জেলার পৌরসভার শহর উন্নয়ন কমিটিতে বিশেষ বিবেচনায় বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
(৩) জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর শুমারির তথ্যে অধ্যায় ৩ রাঙামাটি জেলার শুমারির ফলাফল ৩.১.৪ এর ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যা ছকে বা খানায় বৌদ্ধ বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদের পরিচিতি আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এ শুমারি সম্পর্কিত অধিকতর তথ্য-উপাত্ত আলাদাভাবে ছকে বা খানায় বৌদ্ধ
“বড়ুয়া” জনগোষ্ঠীর পরিচিতি সংযুক্ত করা।

(৪) রাষ্ট্রীয় ভাবে বৌদ্ধ “বড়ুয়া” জনগোষ্ঠীর সদস্যরা বৈষম্যের শিকার বিধায় তিন পার্বত্য জেলা বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে সংসদ সদস্য পদ সংরক্ষিত করে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিকে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দেয়া।
(৫) বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি হিসাবে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা থেকে বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।
(৬) ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বসবাসরত অন্য সকল জনগোষ্ঠীর ন্যায় বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সদস্যদের সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেয়া।
(৭) রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় দিবস এবং শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সাথে সাক্ষাৎকালিন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বসবাসরত বড়ুয়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদের নিজস্ব সংগঠনের মাধ্যমে উল্লেখিত দিবসে আমন্ত্রণ জানানো। চলমান পাতা-০৫
(৮) বৈষম্য বিলোপ কমিশন চাই।
আমাদের দাবি সমূহ মানা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠন এর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় সংবিধানের অধীনে গণতান্ত্রিক পন্থায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ বাদল বরণ বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক নির্মল বড়ুয়া মিলনসহ প্রধান উপদেষ্টা ভদন্ত অদিতানন্দ মহাথোরো, কেন্দ্রীয় সংগঠক শিক্ষক প্রকাশ কুসুম বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সংগঠক জিনপদ বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সংগঠক অপু বড়ুয়া, জেলা সংগঠক নিপ্পন বড়ুয়া, জেলা সংগঠক জুয়েল বড়ুয়া, জেলা সংগঠক পলাশ বড়ুয়া জেলা সংগঠক রুবেল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।